cialis fiyat cialis sipariş http://umraniyetip.org/
Fapperman.com DoEscortscialis viagra viagra cialis cialis viagra cialis20mgsite.com geciktirici sprey azdırıcı damla
সিলেটে নদ-নদীর পানি কমতে থাকলেও বন্যা কবলিত এলাকাগুলোতে পর্যাপ্ত ত্রাণ প্রয়োজন। অন্যদিকে বন্যার পানিতে তলিয়ে রয়েছে নলকূপ। ফলে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে বিশুদ্ধ পানির অভাব দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভ বিরাজ করছে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থানকারীদের মধ্যে।
জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন ১০ লাখ মানুষ। ৩৮৩টি আশ্রয়কেন্দ্রে ২৯ হাজার বন্যার্ত অবস্থান করছেন। আর আশ্রয়কেন্দ্রের বাসিন্দারা বলছেন মাঝে মাঝে যে খাবার বা শুকনো খাবার দেওয়া হয় তা একেবারেই অপ্রতুল।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শুক্রবার (২১ জুন) ৬টি উপজেলায় দেড় হাজার মানুষের মাঝে রান্না করা খাবার ও ৫শ মানুষের মধ্যে শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
এদিকে শুক্রবার থেকে সুরমা-কুশিয়ারাসহ নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। তবে এখনো বিপৎসীমার উপরে অবস্থান করছে। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে শনিবার (২২ জুন) সকাল ১১টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হয়নি। দিন ছিল রৌদ্রোজ্জ্বল।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, শনিবার সকাল ৯টায় সুরমা নদীর সিলেট পয়েন্টে পানির স্তর বিপৎসীমার নিচে নেমে গেছে। তবে সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে ৩৫ সেন্টিমিটার, কুশিয়ারা নদীর আমলশীদ পয়েন্টে ১৫ সেন্টিমিটার, ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ১০৩ সেন্টিমিটার ও শেরপুর পয়েন্টে ১৩ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পানির কমা অব্যাহত থাকলে আজকের মধ্যেই আরো ২টি পয়েন্টে বিপৎসীমার নিচে নেমে যাবে বলে জানিয়েছে পাউবো সূত্র।
জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, শুক্রবার রাত পর্যন্ত জেলার ১৩টি উপজেলাসহ সিলেট সিটি করপোরেশনের ২৩টি ওয়ার্ডের ৯ লাখ ৭৮ হাজার ২শ ২৩ জন মানুষ পানিবন্দি। এরমধ্যে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ২৯টি ওয়ার্ড ও ১৩৬টি ইউনিয়ন বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এখনো ২৫,১৫৫ জন ৩৮৩টি আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। জেলার সিলেট সদর, বিশ্বনাথ, ওসমানীনগর, কোম্পানীগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ, দক্ষিণ সুরমা, বালাগঞ্জ, জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, জকিগঞ্জ, বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জে বন্যা দেখা দেয়।
সিলেট নগরীর শাহজালাল উপশহর, ঘাসিটুলা, মাছিমপুর, ছড়ারপার, তালতলা, কুয়ারপার, মেন্দিবাগ, কামালগড়, চালিবন্দর, যতরপুর, সোবহানীঘাট, কালীঘাট, শেখঘাট, তালতলা, জামতলা ঘুরে দেখা যায়, বাসাবাড়িতে হাঁটু সমান পানি। এসব এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, রিজার্ভ ট্যাংকে নর্দমার পানি প্রবেশ করায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। পানি কমার সাথে সাথে দুর্ভোগও বাড়ছে বাসিন্দাদের। অনেক জায়গায় বিশুদ্ধ পানির সংকট রয়েছে। রান্না বান্নায়ও কষ্ট হচ্ছে বন্যার্তদের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এসব এলাকার আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ত্রাণের জন্য হাহাকার চলছে। সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে যেসব ত্রাণ সামগ্রী সরবরাহ করা হচ্ছে তা খুবই অপ্রতুল। বিশুদ্ধ পানির সংকট রয়েছে এলাকাগুলোতে।
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় দেড় হাজার বন্যার্ত ১৫টি আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। সেখানেও ত্রাণের সংকট রয়েছে। এরমধ্যে অনেকে গবাদি পশু নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছেন। গবাদি পশুর খাবার নিয়েও বিপাকে রয়েছেন আশ্রিতরা।
আনোয়ারা বেগম নামের এক নারী বলেন, এখানে আসার পর এক প্রকার অসহায় দিন কাটাচ্ছি। খিচুড়ি নিয়ে আসলো। আমরা বললাম আমাদেরকে দেওয়ার জন্য, তখন তারা বলে তোমাদের নাম নেই। তাই আমরাও পেলাম না। অবশ্য শুক্রবার আমরা খিচুড়ি পেয়েছি। সাথে ছোট বাচ্চা ও গবাদিপশু রয়েছে। তাদেরও কোনো খাবার নেই।
রফিকুল ইসলাম নামে এক আশ্রিত জানান, আমার গরু রয়েছে ৬ টা। এগুলোরও পর্যাপ্ত খাবার নেই। সড়কে নিয়ে হাঁটাহাঁটি করাচ্ছি। সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে খাবার পর্যাপ্ত না।
একই উপজেলার তেলিখাল উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, অনেক পরিবারই উঠেছেন এই আশ্রয়কেন্দ্রে। সেখানে থাকা তেলিখালের রামাইলের সেলিম উদ্দিন ও সমছিয়া বেগম নামে দুজনের সাথে কথা হয়। তারা জানান, সাথে শিশু আছে। নিজেরাই ঠিকমতো খেতে পারছেন না, আর শিশুরা খাবে কি।
উপজেলা সদরের কোম্পানীগঞ্জ থানা সদর সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে কবিতা বেগম জানান, দিনে একবেলা কারো দয়া হলে খিচুরি বা শুকনো খাবার দিয়ে যায়। আমরা তাই নিয়েই খুশি। পানিটা নেমে গেলে বাড়ি যেতে পারলেই বাঁচি।
গোয়াইনঘাট উপজেলার সালুটিকর কলেজে কথা হয় আলমগীর মিয়ার সাথে। তিনি বলেন, একবেলা কেউ খিচুরি দেয়, মাঝে মাঝে কেউ মুড়ি চিড়া নিয়ে আসে। তা খেয়ে জীবন ধারণ করছি।
অন্যদিকে পানিবন্দি বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে খাবার সংকট রয়েছে। সিলেট সদর উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের দাবাদাকন্দি এলাকায় ত্রাণ নিয়ে গিয়েছিলেন সমাজকর্মী আজির উদ্দিন পাশা। তিনি জানান, প্রবাসী এক ভাইয়ের সহায়তায় শুকনো খাবার নিয়ে ঐ এলাকায় গিয়েছিলেন তিনি। আজির উদ্দিন জানান, রীতিমত হাহাকার চলছে। পর্যাপ্ত নিয়ে যেতে না পারায় নিজের কাছেই খারাপ লেগেছে।
সদর উপজেলার খাদিমনগর ইউনিয়নের ১৪/১৫টি গ্রাম বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি করেছে। স্থানীয় চেয়ারম্যান মো: দিলোয়ার হোসেন বলেন, শুক্রবার পর্যন্ত মাত্র ৪ টন চাল ও কিছু শুকনো খাবার সরকারি বরাদ্দ পেয়েছিলেন। যা পর্যাপ্ত নয়। তিনি বলেন ত্রাণ নিয়ে যাওয়ার পর বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্ত সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবুল কাশেম বলেন, জেলার বন্যা কবলিত এলাকার প্রায় ৯০ ভাগ নলকূপ পানির নিচে। এসব টিউবওয়েলের পানি বিশুদ্ধ না করে পান করলে নানা রোগ ব্যাধি দেখা দিবে।
তিনি বলেন, আমরা সবকটা উপজেলায় পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করছি। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে ট্যাবলেট বিতরণ করা হচ্ছে। তার দপ্তরের সবাই মাঠে রয়েছে বলেও জানান তিনি।
সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান বলেন, বন্যা কবলিত এলাকাসমূহে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। তিনি জানান, শুক্রবার ৬টি উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে রান্না করা খাবার ও শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। কোম্পানীগঞ্জ ও জৈন্তাপুর উপজেলায় ৬শ লিটার ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন পানি বিশুদ্ধকরণ প্লান্ট তৈরি করা হয়েছে। যেখান থেকে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক বলেন, আমাদের আন্তরিকতার কোনো কমতি নেই। আমরা সরকারের বরাদ্দ দ্রুততম সময়ে বন্যার্তদের মধ্যে পৌঁছে দিচ্ছি।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী পরিচালক সজিব হোসাইন জানান, শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে বৃষ্টিপাত হয়নি। চেরাপুঞ্জিতেও বৃষ্টিপাতের হার কমে এসেছে। পরিস্থিতি উন্নতির দিকে। পুরো দিন ছিল রৌদ্রোজ্জ্বল। আজ (শনিবার) সকাল ৯টা পর্যন্ত কোথাও বৃষ্টিপাত হয়নি।
উল্লেখ্য, গত ২৯ মে ভারি বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে সিলেটে বন্যা দেখা দেয়। ৮ জুনের পর থেকে বন্যা পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে আসে। সর্বশেষ গত ১৭ জুন সোমবার থেকে শুরু হওয়া অবিরাম বৃষ্টিতে ফের জেলায় বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে।